ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

  • || ০৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৮৫৭০

ওসমানী মেডিকেলে সাদেকের অপকর্মের দোসর ‘টাকলা’ নাজমুল

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২৪  

নাজমুল হাসান সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এমবিবিএস ৫৪ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তার সহপাঠীরা ২ বছর আগেই ডাক্তার হিসেবে পাস করে বেরিয়ে গেলেও, ক্ষমতার নেশায় বিভোর নাজমুল প্রতিবার সেমিস্টারে ফেল করে আজও তিনি মেডিকেলের ছাত্র। তার অপকর্মে অতিষ্ঠ পুরো হাসপাতাল ও কলেজ ক্যাম্পাস। ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ে তিনি কায়েম করেছেন ত্রাসের রাজত্ব। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি ‘টাকলা নাজমুল’ নামেই অধিক পরিচিত।

সম্প্রতি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুর্নীতিবাজ নার্স ইসরাইল আলী সাদেকের হয়ে তাবেদারি করতে গিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েন টাকলা নাজমুল। পরে অবশ্য মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা চেয়ে এ যাত্রায় ছাড়া পান তিনি। অন্তহীন অভিযোগ থাকলেও, অজ্ঞাত কারণে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ বা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মেডিকেলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩১ মে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। ওই কমিটিতে সাইফুল ইসলামকে সভাপতি এবং মো. নাজমুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। ১ বছর মেয়াদি সেই কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে ২০২২ সালে। কিন্তু পদ ছাড়েননি ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান। নিজের পদবি এবং সিলেটের স্থানীয় এক ‘বড়ভাইয়ের’ নাম ভাঙ্গিয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্য থেকে শুরু করে এহেন কোনো অপকর্ম নেই, যাতে যুক্ত নেই নাজমুল।

দলীয় কর্মকাণ্ডে কিংবা বিশেষ দিবসগুলোতে তার উপস্থিতি না থাকলেও, দিবসকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে হাসপাতালের সকল দপ্তর, চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার এবং হাসপাতালের আশেপাশের এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ে সর্বাগ্রে থাকেন নাজমুল। চাঁদার টাকা না দিলে মারধর, এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও প্রদান করেছেন একাধিক ব্যক্তিকে। তার ভয়ে তটস্থ কলেজের অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে পিওন পর্যন্ত। তার পছন্দের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ‘পাশ’ দিতেই হয়। না দিলে ঘটে যত বিপত্তি। আর পাশ করিয়ে দেওয়ার নামে কলেজের বিভিন্ন সেমিস্টারে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নগদ অর্থসহ নানা উপহার গ্রহণ করেন নাজমুল হাসান।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্তঃকোন্দল সৃষ্টির মূল হোতা নাজমুল তার নিজ স্বার্থের জন্য সিলেট এবং ঢাকার বিভিন্ন স্তরের নেতাদের কাছে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের অন্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনায় পিছপা হন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রলীগ নেতা জানান, নাজমুল হাসান সিলেটের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের কাছে বিভিন্ন সময় তাদের নামে মিথ্যা অপবাদ এবং ভুল তথ্য দিয়ে আমাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দিয়েছে। যার সুস্পষ্ট প্রভাব পড়েছে আমাদের ছাত্রজীবন এবং ব্যক্তিজীবনে। পান থেকে চুন খসলে নাজমুলের অনুসারীদের হাতে হেনস্তা হতে হয়। হোস্টেলে তার ব্যক্তিগত রুম একটি টর্চার সেল। ওই রুমে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র। উনিশ-বিশ হলেই নিরীহ ছাত্রদের উপর নেমে আসে অকথ্য অত্যাচার।

নাজমুলের হাত থেকে রেহাই পায় না এমবিবিএস ও ডেন্টালে পড়ুয়া সুন্দরী ছাত্রীরা। একাধিক ছাত্রী জানান, নাজমুল অনেক রাতে তাদের ফোন দেন। বাধ্য হয়েই কথা বলতে হয়। সে কলেজের সেক্রেটারি, প্রিন্সিপাল স্যারও তাকে ভয় পায়। আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে পড়তে এসেছি। অনেক কিছু মুখ বুজে সহ্য করতে হয়।

শুধু শিক্ষার্থীই নন, নাজমুলের হাতে হেনস্থা হয়েছেন হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে শুরু করে কর্মচারীরাও। ডাক্তার, কর্মচারীদের মধ্যে গ্রুপিং-কোন্দল লাগিয়ে দিজের স্বার্থসিদ্ধি করেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল। হাসপাতালের ভেতরের ক্যান্টিন, ওয়ার্ড মাস্টার থেকে শুরু করে আনসার সবাই চাঁদা দেন নাজমুলকে। নার্স এবং ওয়ার্ডবয়দের নিজের পছন্দমতো ওয়ার্ডে ডিউটি দিতে প্রশাসনকে নিয়মিতভাবে চাপ প্রদান করে আসছেন তিনি। হাসপাতালের চরম দুর্নীতিগ্রস্ত নার্স ইসলাইল আলী সাদেকের সাথে আতাত করে নিয়মিত সরকারি সম্পদ লুটপাট এবং অপব্যবহার করে আসছেন এই ছাত্রলীগ নেতা। নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে আউটসোর্সিং কোম্পানী এমনকি নির্মাণাধীন ভবনের ঠিকাদারের কাছ থেকেও চাঁদা আদায়ের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে নাজমুলের বিরুদ্ধে। ১ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়ে আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগে কোম্পানীকে বাধ্য করেছেন তিনি। মাসিক হারে প্রতিটি সেক্টর থেকে চাঁদা দিতে হয় নাজমুলকে। না দিলেই ঘটে বিপত্তি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে আন্দোলনের হুমকি দেন। একাধিকবার শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিপাকে ফেলারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। স্বার্থসিদ্ধি হয়ে গেলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাস্তায় ফেলে রেখে কেটে পড়েন নাজমুল হাসান।

নিজের ভাগের টাকা না পেলে সাংবাদিকদের দিয়ে হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীদের পেছনে ভুঁইফোঁড় সাংবাদিক নামধারীদের লেলিয়ে দেন এই ছাত্রলীগ নেতা।

নিজে ডাক্তার না হলেও, ডাক্তার পরিচয়ে সিভিল প্রশাসনে কর্মরত এক নারীকে ফুঁসলিয়ে বিয়ে করেছেন নাজমুল। তিনি ডাক্তার নন, এ খবর জানার পর শ্বশুরবাড়ি থেকে জিজ্ঞেস করা হলে তাদের বিভিন্ন ধরণের হুমকিধমকি দিয়ে মুখ বন্ধ করেন। এ নিয়ে স্ত্রীর সাথে মনমালিন্য হলে একাধিকবার স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতনও করেন পাষণ্ড নাজমুল। এ ঘটনায় মানসম্মানের ভয়ে মুখ খুলেননি নাজমুলের স্ত্রী।

[চলবে...]

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার